এ হক রাজু: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিষপান করে মনি বেগম (১৭) নামে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে তার মরদেহ উদ্ধার করে কুলাউড়া থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ। সে উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের দেওগাঁও গ্রামের মৃত সোবহান মিয়ার মেয়ে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে নিজ ঘরে সে বিষপান করে। চেঁচামেচি শোনে মনির মা দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, দুপুরে তার মা ধান দিতে বাড়ির ওঠানে যান। এসময় ঘরে ঢুকে দেখতে পান তার মেয়ে ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে আছে। এসময় পাশে বিষের বোতল দেখে বুঝতে পারেন মেয়ে বিষ পান করেছে। দ্রæত হাসপাতালে নিয়ে এলে প্রথমে কুলাউড়া হাসপাতাল পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মনির মৃত্যু রহস্যজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষয়টি রহস্যজনক। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
এর আগে শারমিন আক্তার (১৭) নামে অন্য এক তরুণী গলায় উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের কালিয়াটিলা গ্রামের লাল মিয়ার মেয়ে ও শমসেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। তবে আত্মহত্যা করার আগে সে একটি চিরকুট লিখে যায়।
চিরকুটে এরকম লেখা-‘আমার আব্বা, আম্মা ও ভাই আমাকে খুব আদর করেন। সবাই আমাকে ভালোবাসেন। আমার মা-বাবা আমাকে বিয়ে দিতে চাইছিলেন। আমি এই মুহূর্তে বিয়ের জন্য প্রস্তুত নই। কিন্তু বিয়েতে অমত করলে আমার মা বাবা কষ্ট পাবেন। আমি আমার মা-বাবাকে কষ্ট দিতে চাই না। তাই এই পথ বেছে নিয়েছি। আমি জানি ওপারে অগ্নি চুল্লিতে আমি জ্বলবো। তবুও আমাকে সবাই মাফ করে দিয়েন।’
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শারমিন আক্তার (১৭) নামে তরুণী আত্মহত্যার আগে এই চিরকুটটি লিখে যায়। সে উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের কালিয়াটিলা গ্রামের লাল মিয়ার মেয়ে ও শমসেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
চিরকুটে আরও সে লিখে, ‘আমার জীবনের ১৬টি বছর খুব সুন্দর ছিলো। কিন্তু ১৭তম বছরে অনেক কিছু ঘটে গেছে।’
সোমবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে পুলিশ তার নিজ বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।। এরআগে সোমবার ভোরের দিকে সে আত্মহত্যা করেছে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিবারের অজান্তে সে ঘরের ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁছিয়ে আত্মহত্যা করে শারমিন। গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে তার লাশ উদ্ধার করে। শারমিনের শেষ লেখা চিরকুটটি পুলিশ উদ্ধার করেছে।
উপরিউক্ত চিরকুটটির বিষয়টি জানিয়ে স্থানীয় হাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু বলেন, ধারণা করছি, এটা আত্মহত্যা।
লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন কুলাউড়া থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান।